এক সময় অকল্পনীয় মনে হলেও আজ বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়া আর কোন অসাধ্য সাধনা নয়। হিমালয়ের চূড়া থেকে আল্পসের পাদদেশে পা রাখার স্বপ্ন এখন বাস্তবায়িত হতে পারে। এজন্য আপনাকে বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায় জানতে হবে। সুইজারল্যান্ড একটি ব্যয়বহুল দেশ। তবে দেশটি বিশ্বের সর্বোচ্চ বেতনের দেশগুলোর মধ্যে একটি।
শ্রমিকেরা বেশি আয়ের মাধ্যমে ভালো জীবনযাপন করতে পারে। দেশটিতপ শিক্ষার্থীদের কাজের ভালো সুযোগ রয়েছে। স্নাতকের পর অনেক শিক্ষার্থী চাকরি করতে পারে। দেশটি মনোরম আল্পস পর্বতমালা, মনোমুগ্ধকর হ্রদ এবং সবুজ উপত্যকার জন্য বিখ্যাত। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এটি একটি স্বর্গ। তবে বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায় জানলেই হবে না। পাশাপাশি আরো জানতে হবে সুইজারল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগবে।
বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড যাওয়ার উপায়
সুইজারল্যান্ড সেনজেনভুক্ত একটি দেশ। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অধিভুক্ত কোন দেশ নয়। বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ দেশটিতে যেতে চায়। কিন্তু দেশটিতে যাওয়ার জন্য সেনজেন ভিসা প্রয়োজন। তবে জাতীয় ভিসা নিয়ে দেশটিতে যাওয়া যাবে। তবে সেনজেন ভিসা পেলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়। যা আপনি সেনজেন দেশের সুবিধা কি পড়লে ভালোভাবে জানতে পারবেন।
আপনার অনেক বেশি শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলে আপনি দেশটিতে খুব সহজে যেতে পারবেন। নতুবা দেশটিতে যাওয়া দুঃসাধ্য হয়ে যাবে আপনার জন্য। অদক্ষ কর্মী সাধারণত সুইস সরকার নেয় না। আপনার উচ্চ যোগ্যতা ও দক্ষতা থাকলে (সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার) আপনি অনলাইনে জবের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
দেশটির সরকার আপনাকে যোগ্য মনে করলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা দিবে। তবে বাংলাদেশের মত তৃতীয় শ্রেণীর দেশ থেকে দেশটিতে যাওয়া কঠিন। সেটা যে কোনো ক্যাটাগরির ভিসাতে হোক। সুইজারল্যান্ড যেতে যেসব যোগ্যতা এবং কাগজপত্র লাগে:
- পাসপোর্ট
- পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি
- শিক্ষগত যোগ্যতার সনদ
- জাতীয় পরিচয়পত্র
- ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সনদ
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- ভিসা ফি প্রদানের রশিদ
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্সি সার্টিফিকেট
- চিকিৎসা বিমা
- কভার লেটার
- চাকরির অভিজ্ঞতার প্রমাণ
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ডে কোন কাজের চাহিদা বেশি
সুইজারল্যান্ড যেতে কত টাকা লাগবে
সুইজারল্যান্ড যাওয়ার খরচ নির্ভর করে ভিসা ক্যাটাগরি এবং আবেদন প্রসেসিং এর উপর। বাংলাদেশ থেকে কেউ যদি নিজে নিজে ভিসার জন্য আবেদন করে তাহলে তার খরচ পড়বে ৭ লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ টাকা। কেউ যদি বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে যায় তাহলে খরচ ১৫ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা লাগবে। বাংলাদেশ থেকে সুইজারল্যান্ড ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। তাই দালালের লোভনীয় ভিসা অফার থেকে দূরে থাকবেন। সাধারণত টুরিস্ট এবং স্টুডেন্ট ভিসার খরচ কম হয়ে থাকে। অন্যদিকে, ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ বেশি হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা আবেদন
সুইজারল্যান্ড নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব লাভ করা অত সহজ ব্যাপার নয়। এটি একটি দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়া। তবে কিছু উপায় রয়েছে সুইজারল্যান্ড নাগরিকত্ব পাওয়ার। আপনার যদি সি পারমিট থাকে এবং ১০ বছরের বেশি সময় ধরে দেশটিতে বসবাস করে থাকেন তাহলে আপনি নাগরিক হওয়ার আবেদন করতে পারবেন। আপনি সুইস কোনো নাগরিককে বিয়ে করে নাগরিকত্ব পেতে পারেন।
এজন্য আপনার বিয়ের বয়স কমপক্ষে তিন বছর হতে হবে। বিয়ে সহ দেশটিতে বসবাসের বয়স মোট ৫ বছর হতে। জন্মসূত্রে কিছু শর্ত পূরণ করে নাগরিকত্ব পাওয়া যায়। আপনার সন্তান আপনি নাগরিক না হওয়া সত্ত্বেও দেশটিতে জন্মগ্রহণ করলে নাগরিকত্ব লাভ করতে পারবে। এছাড়া আপনার পিতা-মাতা যদি সুইস নাগরিক হয় তাহলে আপনি এমনিতেই নাগরিকত্ব পেয়ে যাবেন।
আরও পড়ুন: সুইজারল্যান্ড সর্বনিম্ন বেতন কত
Switzerland visa work