কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি ২০২৪ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

স্বপ্নের দেশ কানাডায় যেতে হলে কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। কারণ ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসা নির্বাচন করতে হয়।

কানাডা উত্তর আমেরিকার বড় একটি রাষ্ট্র। বিভিন্ন দেশ থেকে বিভিন্ন উদ্দেশ্যে কানাডায় পাড়ি জমাচ্ছে। আমাদের দেশ থেকেও কেউ হয়তো ভ্রমণ করার উদ্দেশ্যে, কেউ হয়তো পড়াশোনা করার উদ্দেশ্যে এবং আবার কেউ হয়তো কাজের উদ্দেশ্যে স্বপ্নের দেশ কানাডায় পাড়ি জমাচ্ছে।

স্বপ্নের এই দেশে পাড়ি জমাতে হলে অনেক নিয়ম কানুন ও প্রক্রিয়া মানতে হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি সিলেক্ট করা। আর এজন্য আপনাকে অবশ্যই ভিসার ক্যাটাগরিগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।

কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি

ভিসা ক্যাটাগরি বলতে আসলে ভিসার ধরনকে বুঝায়। কানাডার মত অন্যান্য যেকোনো দেশে যেতে হলে ভিসার ক্যাটাগরি সম্পর্কে জানতে হবে। কারণ ভিসা ক্যাটাগরি সিলেট করা লাগে ভিসার আবেদন করার সময়।

এজন্য ভালোভাবে জানতে হবে আপনি আসলে কোন ধরনের ক্যাটাগরির মধ্যে পড়েন এবং কোন ধরনের বিষয় ক্যাটাগরি আপনার জন্য উপযুক্ত।

কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি মূলত পাঁচ প্রকার। যথা:

  1. স্টুডেন্ট ভিসা
  2. টুরিস্ট ভিসা (টেম্পোরারি রেসিডেন্ট ভিসা)
  3. ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
  4. পার্মানেন্ট রেসিডেন্ট ভিসা
  5. ফ্যামিলি স্পন্সরশীপ ভিসা

এই ৫ প্রকার ভিসা ক্যাটাগরি সবচেয়ে বেশি পরিচিত। এগুলো ছাড়াও উপরোক্ত ক্যাটাগরির অধীনে আরো অনেক প্রকার ভিসা রয়েছে। সেগুলো হলো:

  • জব ভিসা
  • শ্রমিক ভিসা
  • কৃষি ভিসা
  • লেবার ভিসা
  • ফ্রি ভিসা
  • মেকানিক্যাল ভিসা
  • ড্রাইভিং ভিসা
  • ইমিগ্রেশন ভিসা
  • বিজনেস ভিসা
  • চিকিৎসা ভিসা

ভিসার ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিসার খরচ এবং যোগ্যতা ভিন্ন হয়ে থাকে।

কানাডা জব ক্যাটাগরি

কানাডায় বিভিন্ন ধরনের জবের ক্যাটাগরি রয়েছে। একই ক্যাটেগরিতে নানা ধরনের কাজ করা যায়।

  • স্বাস্থ্যসেবা: ডাক্তার, নার্স এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবা পেশাদার।
  • তথ্য প্রযুক্তি: সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, সিস্টেম বিশ্লেষক এবং আইটি বিশেষজ্ঞ।
  • ইঞ্জিনিয়ারিং: সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার এবং ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার।
  • ফাইন্যান্সিং: হিসাবরক্ষক, আর্থিক বিশ্লেষক এবং ব্যাংকার।
  • শিক্ষা: শিক্ষক, অধ্যাপক এবং শিক্ষাবিষয়ক প্রশাসক।
  • দক্ষতা ভিত্তিক: ছুতার, ইলেকট্রিশিয়ান, প্লাম্বার এবং অন্যান্য দক্ষ শ্রমিক।
  • আতিথেয়তা এবং পর্যটন: হোটেল এবং রেস্তোরাঁর কর্মী, ট্যুর গাইড এবং ইভেন্ট পরিকল্পনাকারী।
  • প্রাকৃতিক সম্পদ: বন, খনি, এবং তেল শিল্পের শ্রমিক।
  • উৎপাদন: কারখানার কর্মী, উৎপাদন তত্ত্বাবধায়ক এবং মান নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ।
  • প্রশাসনিক সেবা: রিসেপশনিস্ট, প্রশাসনিক সহকারী এবং অফিস ম্যানেজার।

কানাডা ডি ক্যাটাগরি ভিসা

কানাডা ডি ক্যাটাগরিতে ৪ ধরনের ভিসার হয়েছে। সেগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলো:

  1. D-0 Visa (Company-sponsored): কানাডিয়ান কোম্পানি কোন ব্যক্তিকে স্পন্সর করলে তখন এই ভিসা ক্যাটাগরিতে পড়বে। সেটা কাজের জন্য হতে পারে, অবদান কিংবা অর্জনের জন্যও হতে পারে।
  2. D-1 Visa (Permanent Residency): এই ক্যাটাগরিতে বিদেশী শ্রমিকেরা স্থায়ী বাসিন্দা হতে চায়।
  3. D-2 Visa (Government or High Authority): সরকারি কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী এবং রাজনৈতিক আশ্রয় ইত্যাদি এই ক্যাটাগরিতে পড়ে।
  4. D-3 Visa (Student or Military Personnel): এই ভিসা শিক্ষার্থী এবং সেনাবাহিনীর লোকদের জন্য।

কানাডা ভিসা পাওয়ার সহজ উপায়

কানাডায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা নিয়ে যাওয়া যায়। একেক ক্যাটাগরিতে একেক প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। স্টুডেন্ট ভিসায় কানাডা যেতে হলে অবশ্যই ইংরেজি ভাষার দক্ষতা থাকতে হবে। এজন্য ভাষা টেস্ট স্কোর (Ielts) লাগবে।

আর টুরিস্ট ভিসায় যেতে চাইলে অবশ্যই ভালো ট্রাভেল ইতিহাস থাকা লাগবে। এ ধরনের ভিসা খুব সহজে পেতে চাইলে ধারাবাহিকভাবে আপনাকে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম এবং মিশর আগে ভ্রমণ করতে হবে।

এরপর আপনাকে যুক্তরাজ্যে ভিজিট করতে হবে। কারণ বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ভিসার খুব সহজে পাওয়া যাচ্ছে। উক্ত দেশগুলো ভিজিট করার পর আপনি চাইলে কানাডা এমন ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।

এভাবে ট্রাভেল হিস্ট্রি তৈরি করে আবেদন করলে আশা করি কানাডার ভিজিট ভিসা পেয়ে যাবেন। ভ্রমণ করার সময় খেয়াল রাখবেন এক দেশ থেকে অন্য দেশে ভিজিটের সময়ের পার্থক্য যেন এক থেকে দুই মাসের বেশি না হয়।

এতে তারা খুব সহজে আপনাকে বিশ্বাস করবে যে একজন ভ্রমণ প্রিয় মানুষ। এছাড়া আপনি চাইলে ফ্যামিলি স্পন্সরশিপ ভিসায় কোন রকমের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা ছাড়াই কানাডায় পাড়ি জমাতে পারবেন।

এজন্য কানাডার নাগরিকের ইনভাইটেশন লাগবে। সেটা হতে পারে আপনার পরিবারের সদস্য কিংবা আত্মীয়-স্বজন কিংবা কানাডার স্থানীয় নাগরিক।

কানাডায় যেতে কত টাকা লাগে?

ভিসার ধরন অনুযায়ী খরচ ও কাগজপত্র আলাদা হয়ে থাকে। নিম্নে তালিকা আকারে খরচ দেওয়া হলো:

ভিসা ক্যাটাগরি আনুমানিক মোট খরচ (লক্ষ)
স্টুডেন্ট ৫-৬৳
টুরিস্ট ৩-৫৳
ওয়ার্ক পারমিট ৮-১২৳

এছাড়া কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি সম্পর্কে যেকোনো ধরনের প্রশ্ন কিংবা পরামর্শ থাকলে কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। আমরা তাৎক্ষণিক কমেন্ট করে আপনার মূল্যবান কমেন্টের উত্তর দিব।

কানাডা ভিসা সম্পর্কিত আরও আর্টিকেল পড়ুন

ক্রমিক নম্বর আর্টিকেল লিংক
সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়
কানাডা যাওয়ার খরচ কত
কানাডায় কোন কাজের চাহিদা বেশি
কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবেদন করার নিয়ম
কানাডায় সর্বনিম্ন বেতন কত

5 thoughts on “কানাডা ভিসা ক্যাটাগরি ২০২৪ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন”

  1. কোনো এজেন্সির মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা প্রসেসিং করে দেওয়া যায় কি?

    Reply
  2. কানাডায় ফুড সার্ভিস ওয়ার্কার কাজে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা কোনো এজেন্সির মাধ্যমে প্রসেসিং করে যাওয়া যায়?

    Reply

Leave a Comment