উন্নত জীবনের আশায় মালয়েশিয়ার প্রবাসীরা ইউরোপের দেশে পাড়ি জমাতে চায়। কারণ ইউরোপের দেশে মালয়েশিয়ার তুলনায় কয়েক গুণ বেশি বেতন পাওয়া যায়। মালয়েশিয়ান প্রবাসীর কাছে ইউরোপের দেশ ইতালি সবচেয়ে জনপ্রিয় গন্তব্য। বেশিরভাগ প্রবাসীরা স্বপ্ন দেখে থাকেন ইউরোপের দেশ ইতালিতে যাওয়ার। তবে এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য অবশ্যই আপনাকে মালয়েশিয়া থেকে ইতালি (ইউরোপ) যাওয়ার উপায় জেনে নিতে হবে।
ইউরোপের কর্মপরিবেশ সাধারণত মালায়েশিয়ার তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ এবং সুনিয়ন্ত্রিত। কর্মীদের অধিকার রক্ষা করে এমন শক্তিশালী আইন রয়েছে এবং কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য এবং নির্যাতনের ঘটনা কম লক্ষ্য করা যায়। ইউরোপের দেশ ইতালির জীবনযাত্রার মান মালায়েশিয়ার তুলনায় অনেক বেশি। এই দেশে গেলে উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা, এবং বসবাসের জন্য সুন্দর পরিবেশ পাবেন।
ইতালি একটি সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং বহু সংস্কৃতির দেশ। এটি ভ্রমণের জন্য একটি জনপ্রিয় দেশ। এই দেশে বসবাসকারী প্রবাসীরা সহজেই দেশটির বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করতে পারে। সেনজেন চুক্তি স্বাক্ষরকারী ২৭টি দেশের মধ্যে ইতালি একটি দেশ। এই দেশে গেলে সেনজেন দেশের সুবিধা পাবেন। উপরোক্ত সুবিধা পেতে হলে আপনাকে মালয়েশিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় জানতে হবে। এজন্য আপনাকে এই আর্টিকেলটি একদম শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।
মালয়েশিয়া থেকে ইতালি (ইউরোপ) যাওয়ার উপায়
মালয়েশিয়া থেকে চাইলে সরাসরি ইতালিতে যাওয়া যায়। এজন্য বৈধ ভিসার প্রয়োজন। ইতালি এগ্রিকালচার ভিসা এবং ইতালি স্পন্সর ভিসার মাধ্যমে খুব সহজে বৈধভাবে মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপের দেশ ইতালিতে পাড়ি জমাতে পারবেন।
তবে এই ভিসাগুলো পাওয়ার জন্য ইতালিতে আপনার পরিচিত লোক থাকা প্রয়োজন। তাহলে খুব সহজে আপনি ইউরোপের ভিসা পেয়ে যাবেন। আপনাকে কোন কোম্পানি বা পরিচিত কোন লোক যদি স্পন্সর করে তাহলে খুব সহজে এই ভিসা পাওয়া যাবে।
তারপর আপনাকে ইতালি এগ্রিকালচার কিংবা স্পন্সর ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এছাড়া আপনি চাইলে টুরিস্ট ভিসা নিয়ে ইতালিতে আসতে পারবেন। ইউরোপের সেনজেন ভিসা পেলে ২৭টি দেশে ভ্রমণ করার সুযোগ পাবেন।
ইউরোপের সেনজেন ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে ইউরোপীয় কমিশনের ওয়েবসাইট থেকে ভিসার আবেদনপত্র ডাউনলোড করে পূরণ করতে হবে। এরপর আপনাকে ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে জমা দিতে হবে।
এরপর আপনাকে ইউরোপের সেনজেন দেশের যেকোনো একটি দূতাবাসে আপনাকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর সময় পূরণকৃত আবেদনপত্র এবং প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র দূতাবাসে জমা দিন। সঙ্গে অবশ্যই ভিসা ফি পরিশোধ করবেন। ভিসার অনুমোদন পেলে আপনাকে পাসপোর্ট সহ ডেলিভারি দেওয়া হবে।
মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপের দেশ ইতালিতে যাওয়ার আরেকটি সহজ উপায় রয়েছে। সেটি হলো প্রথমে বৈধভাবে মালয়েশিয়া থেকে রোমানিয়া যাওয়া। তারপর আপনাকে রোমানিয়া থেকে স্বপ্নের দেশ ইতালিতে যেতে হবে। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে পড়ুন রোমানিয়া থেকে কিভাবে ইতালি যাওয়া যায়।
মালয়েশিয়া থেকে ইতালি (ইউরোপ) যেতে কি কি লাগে
ইতালি যাওয়ার যোগ্যতা থাকলে আপনি সেনজেনভুক্ত এই দেশে যেতে পারবেন। এজন্য অবশ্যই একটি বৈধ ভিসার প্রয়োজন। আর এই ভিসা আবেদন করতে প্রয়োজনীয় কিছু কাগজপত্র লাগবে। এগুলো ছাড়া আপনি ইউরোপের দেশ ইতালির ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
মালয়েশিয়া থেকে ইতালি যেতে যা যা লাগে:
- বৈধ পাসপোর্ট
- ভিসা অ্যাপ্লিকেশন ফরম
- ভ্রমণ বীমা (ভিজিট ভিসার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)
- স্কিল সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ
- স্পন্সরের ইনভাইটেশন লেটার
- ফাইনান্সিয়াল সক্ষমতার প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
- ইতালি ভাষা শিক্ষার সার্টিফিকেট
- ইংরেজি ভাষা দক্ষতা সার্টিফিকেট
- করোনা টিকা সনদ
- জাতীয় পরিচয় পত্র
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- ভ্রমণের উদ্দেশ্য
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
মালয়েশিয়া থেকে ইতালি (ইউরোপ) যেতে কত টাকা লাগে
মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপের দেশ রোমানিয়ায় বৈধভাবে যেতে আনুমানিক প্রায় ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা লাগে। এরপর রোমানিয়া থেকে আপনাকে ইতালিতে যেতে হবে। এতে আনুমানিক ৫ থেকে ৬ লক্ষ টাকা লাগতে পারে। তবে মালয়েশিয়া থেকে সরাসরি ইউরোপের দেশ ইতালিতে যেতে ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা লাগতে পারে।
পরিচিত আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে অল্প টাকা দিয়ে যাওয়া সম্ভব। বিভিন্ন এজেন্সি কিংবা দালালের মাধ্যমে গেলে অনেক বেশি টাকা লাগতে পারে। মালয়েশিয়া থেকে ইউরোপে যাওয়ার উপায় জানার পর অবশ্যই বৈধ ভিসা নিয়ে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করবেন।