যারা কাজের উদ্দেশ্যে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে মালয়েশিয়া যেতে চাচ্ছেন তাদের অবশ্যই মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত জানা উচিত। তাহলে আপনি মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে আনুমানিক একটি ধারণা করতে পারবেন। এতে করে দালাল এবং বিভিন্ন এজেন্সির লোকদের দ্বারা আপনার প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবন থাকবে না। আপনার কাছ থেকে তারা বেশি অর্থ নিতে পারবে না। এজন্য আপনাকে মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত জানতে হবে। নতুবা আপনার ভিসা খরচ সম্পর্কে কোন আইডিয়া থাকবে না।
মালয়েশিয়া উন্নত দেশের তালিকায় নিজের নাম লিখিয়েছে। এই দেশে গিয়ে শ্রমিকেরা ভালো পরিমাণ টাকা ইনকাম করতে পারে। এই দেশে বর্তমানে শ্রমিকের চাহিদা ব্যাপক। তাই প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ একটু ভালো থাকার আশায় মালয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে এই দেশে পাড়ি জমাচ্ছে। তবে এই দেশে যাওয়ার পূর্বে আপনার ধারণা থাকা উচিত যে মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে।
আমাদের দেশ থেকে স্বল্প খরচে সরকারিভাবে মালয়েশিয়া যাওয়া যায়। মালয়েশিয়ার ভিসা পাওয়া আমাদের জন্য সবচেয়ে সহজ। সরকারিভাবে যেতে না পারলে আপনাকে বিশ্বস্ত কোন এজেন্সির শরণাপন্ন হতে হবে। বাংলাদেশে মালয়েশিয়া অনুমোদিত বহু রিক্রুটিং এজেন্সি রয়েছে যেগুলোর সাহায্য নিয়ে আপনি যেতে পারবেন বহু কাঙ্খিত এই দেশটিতে। তবে বেশিরভাগ এজেন্সি এবং দালালেরা বেশি বেতনের লোভ দেখিয়ে ভিসা তৈরি করতে বেশি টাকা নিয়ে থাকে। এজন্য আপনাকে মালয়েশিয়া কাজের বেতন কত এই আর্টিকেলটি পড়তে হবে।
মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত
মালয়েশিয়া সরকার বিভিন্ন ধরনের ভিসা অফার করে থাকে। যেমন: স্টুডেন্ট ভিসা, ভিজিট ভিসা এবং ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ইত্যাদি। মালয়েশিয়া ওয়ার্ক পারমিট ভিসা আবার নানা রকমের হয়ে থাকে। এসব ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী মালয়েশিয়া ভিসার দাম কম বেশি হয়ে থাকে। এছাড়া ভিসার মেয়াদ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মালয়েশিয়া বর্তমানে অনেক ধরনের ভিসা চালু রয়েছে। যেমন:
- স্টুডেন্ট ভিসা
- টুরিস্ট ভিসা
- কৃষি ভিসা
- ফ্যাক্টরি ভিসা
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- কোম্পানি ভিসা
- এমপ্লয়মেন্ট ভিসা
- এন্ট্রি ভিসা
- মেডিকেল ভিসা
- বিজনেস ভিসা
- কলিং ভিসা ইত্যাদি
বর্তমান বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে সরকারিভাবে আনুমানিক প্রায় ৮০ হাজার টাকার মতো লাগে। কিন্তু মালয়েশিয়ার ভিসার চাহিদা অত্যধিক বেড়ে যাওয়ায় এই ভিসা পেতে কয়েক গুণ বেশি টাকা লাগে। দালালের মাধ্যমে গেলে অল্প খরচে যাওয়া যায়। তবে এই অবৈধ মাধ্যমে গেলে জীবন ঝুঁকিতে পড়বেন। অন্যদিকে আপনি চাইলে মালয়েশিয়া অনুমোদিত বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে যেতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে খরচ পড়ে আনুমানিক কয়েক লক্ষ টাকা।
ক্রমিক নম্বর | ভিসা ক্যাটাগরি | মোট ভিসা খরচ (টাকায়) |
---|---|---|
১ | স্টুডেন্ট ভিসা | ২,০০,০০০ – ৩,০০,০০০ |
২ | টুরিস্ট ভিসা | ১,০০,০০০ – ২,৫০,০০০ |
৩ | ওয়ার্ক পারমিট (কাজের) ভিসা | ২,০০,০০০ – ৫,০০,০০০ |
৪ | বিজনেস ভিসা | ৪,০০,০০০ – ৫,০০,০০০ |
৫ | মেডিকেল ভিসা | ১,০০,০০০ – ২,০০,০০০ |
মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগে
মালয়েশিয়া যেতে কত টাকা লাগবে সেটা নির্ভর করবে সম্পূর্ণ আপনার ভিসা ক্যাটাগরি, ভিসার মেয়াদ এবং যাওয়ার মাধ্যমের উপর। মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচের মধ্যে সকল ধরনের খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। আপনি যদি সরকারিভাবে ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে মালয়েশিয়া যেতে পারেন তাহলে আনুমানিক ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা লাগবে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে এই টাকার পরিমান কম বেশি হতে পারে। যদিও সরকারিভাবে যাওয়ার খরচ ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা। কিন্তু এই খরচে আপনি যেতে পারবেন না। কারণ মালয়েশিয়া কাজের ভিসার চাহিদার ব্যাপক।
তবে দালালের মাধ্যমে কম খরচে যাওয়া যায়। তবে এই মাধ্যমে গেলে আপনি অবৈধ প্রবাসী হিসেবে কাজ করবেন। যাওয়ার পথে জীবন ঝুঁকি বিদ্যমান। দালালের মাধ্যমে মালয়েশিয়া গেলে আনুমানিক প্রায় ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা লাগে। আপনি যদি সরকারিভাবে যেতে না পারেন তবে মালয়েশিয়া অনুমোদিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে বৈধভাবে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে মালয়েশিয়া যাওয়ার খরচ আনুমানিক প্রায় ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা লাগে। তবে ভিসা ভেদে এই খরচের তারতম্য রয়েছে।
মালয়েশিয়া কোন ভিসা ভালো
মালয়েশিয়া আপনি বিভিন্ন ধরনের ভিসা নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে যেতে পারবেন। এর মধ্যে রয়েছে কোম্পানি ভিসা, এজেন্ট ভিসা এবং ফ্রি ভিসা। সবগুলো ভিসার ক্ষেত্রে সুবিধা এবং অসুবিধা বিদ্যমান। তবে কোম্পানি ভিসার সুযোগ-সুবিধা সবচেয়ে বেশি রয়েছে। কিন্তু এখানে একটি অসুবিধা রয়েছে সেটা হলো অনেক সময় কোম্পানি খারাপ হয়। এক্ষেত্রে আপনাকে নানা ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে। তবে অনেকের জন্য মালয়েশিয়া কলিং ভিসা ভালো হতে পারে। এই দুটি ভিসা সম্পর্কে আপনি আরও বিস্তারিত জানতে পারেন।
কোম্পানি ভিসা পেলে কোম্পানির মালিক আপনার সকল ধরনের খরচ বহন করে থাকে। ভিসা প্রসেসিং থেকে শুরু করে মালয়েশিয়া গিয়ে থাকা-খাওয়া এবং আবার বাড়িতে আসার বিমান টিকেট পর্যন্ত দিয়ে থাকে। তবে কিছু কিছু কোম্পানি এসব সুবিধা দেয় না। এজন্য আপনাকে ভালোভাবে জেনে যেতে হবে। প্রয়োজনে আপনি মালয়েশিয়া কোম্পানির নাম জেনে নিবেন। আরও জানতে পারেন মালয়েশিয়া কোম্পানি ভিসা বেতন কত এবং যাওয়ার খরচ ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত।
আপনি ভালো ভিসা নির্বাচন করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনা করবেন:
- আপনার দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা
- আপনার কাজের ধরন
- আপনার নিয়োগকর্তা
- আপনার বেতন
- আপনার থাকার সময়কাল
- অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা