সৌদি আরবের প্রবাসীরা আরও বেশি উন্নত জীবন যাপনের আশায় ইউরোপের দেশ ইতালিতে পাড়ি জমাতে চায়। সৌদি আরব ধনী রাষ্ট্র এটা সত্য, তবে ইউরোপের দেশ থেকে বিভিন্ন দিক দিয়ে পিছিয়ে রয়েছে। এজন্য প্রবাসীরা সৌদি আরব থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় খুঁজে বেড়ায়। কারণ ইতালি ইউরোপের একটি উন্নত দেশ। যারা সৌদি থেকে ইউরোপে যেতে চান তাদের জন্য এই দেশটি সেরা গন্তব্য হতে পারে।
ইউরোপের প্রাচীন এই দেশে যেতে পারলে আপনি উপভোগ করতে পারবেন উন্নত মানের লাইফস্টাইল, শিক্ষা ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা সেবা। এছাড়া ইতালি তার সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। রোম, ফ্লোরেন্স এবং ভেনিসের মতো শহরগুলো তাদের ঐতিহাসিক স্থাপত্য এবং বিখ্যাত শিল্পকর্মের জন্য পরিচিত। এজন্যই মূলত প্রবাসীরা সৌদি আরব থেকে ইউরোপ যাওয়ার উপায় জানতে চায়।
ইতালি ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি দেশ যার কারণে সৌদি প্রবাসীরা ইতালিতে প্রবেশের পর অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে ভ্রমণ করতে পারে। এসব কারণেই প্রবাসীরা এই দেশটিতে যাওয়ার জন্য আকৃষ্ট হচ্ছে।
সৌদি আরব থেকে ইতালি (ইউরোপ) যাওয়ার উপায়
ইউরোপে, মানবাধিকার ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করা হয়। তাই একজন মানুষ ও শ্রমিক হিসেবে আপনি সেখানে সর্বোচ্চ মর্যাদা পাবেন। অন্যদিকে, সৌদি আরবে শ্রমিকদের প্রতি অন্যায় ও অবিচার নিয়মিত ঘটে। ইউরোপের দেশগুলোতে শ্রমিকদের কাজের মূল্য দেওয়া হয়। সৌদি আরবের চেয়ে এখানে ৫ থেকে ১০ গুণ বেশি টাকা উপার্জন করা সম্ভব।
সৌদি আরব থেকে ইতালি (ইউরোপ) যেতে হলে অবশ্যই আপনার ভিসার প্রয়োজন হবে। ওয়ার্ক পারমিট এবং ভিজিট ভিসার মাধ্যমে আপনি সৌদি থেকে ইউরোপে যেতে পারবেন। তবে শিক্ষার্থী হলে অবশ্যই স্টুডেন্ট ভিসা নিবেন। ইউরোপের ভিজিট ভিসা পাওয়ার জন্য আপনাকে সৌদির পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশ ভ্রমন করতে হবে। এজন্য মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলোতে আপনি ভ্রমণ করতে পারেন। এতে ইটালি ভিজিট ভিসা পাওয়া আপনার জন্য সহজ হবে। আপনি যদি সৌদি আরবের নাগরিক হন তাহলে আপনার জন্য ভিসা পাওয়া আরও বেশি সহজ হবে।
সৌদি আরবের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি আরব দেশে ভ্রমণ করার পর আপনাকে ইউরোপের দেশ ইতালি ভিজিট ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। আপনার আর্থিক কোন সমস্যা না থাকলে ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। এজন্য অবশ্যই ইতালির কোন কোম্পানির কাজের জন্য অফার লেটার লাগবে। নতুবা আপনি ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
সৌদি আরব থেকে ভিজিট ভিসায় ইতালিতে গেলে প্রথমে কাজ খুঁজে পেতে আপনার সমস্যা হতে পারে। তবে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই, কারণ ইতালিতে অবৈধ প্রবাসীরা কাজ করতে পারে। তবে অবৈধ প্রবাসীদের কাজের বেতন তুলনামূলক একটু কম হয়ে থাকে বৈধ প্রবাসীদের চেয়ে। ইতালির ভিজিট ভিসা আবেদন করার জন্য আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে। এরপর অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।
অনলাইনে ইতালি ভিসা আবেদন সম্পন্ন হয়ে গেলে আপনাকে ভিসা আবেদন ফি পরিশোধ করতে হবে। এরপর ইতালি দূতাবাসে আপনাকে একটি ইন্টারভিউ দিতে হয়। ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনাকে প্রমাণ করতে হবে যে ইটালি গিয়ে আবার ফিরে আসবেন। আপনাকে ভ্রমণের উদ্দেশ্য জানাতে হবে। ইন্টারভিউ নেওয়ার পর ইতালি ভিসা কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখবে। যদি সেটা যুক্তিসঙ্গত মনে হয় তাহলে আপনাকে ইতালি ভিজিট ভিসা দিয়ে দিবে।
নতুবা আপনার ভিসার আবেদনটি রিজেক্ট করে দিবে। এই ভিজিট ভিসা প্রসেসিং হতে আনুমানিক ৪ থেকে ১২ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। সৌদি আরব থেকে ইতালি যেতে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ মানুষের কাছ থেকে তথ্য নিবেন। এতে ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও সঠিক তথ্য জানতে পারবেন। যা আপনার ইউরোপ যাত্রাকে সহজ ও সফলকাম করবে।
সৌদি আরব থেকে ইতালি (ইউরোপ) যেতে কি কি লাগে
সৌদি আরব থেকে স্বপ্নের দেশ ইতালি অনেকে যেতে চায়। ইউরোপের এই দেশে সৌদি আরব থেকে সাধারণত ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং ভিজিট ভিসা নিয়ে প্রবাসীরা যায়। এই ২টি ভিসা আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেগুলো লাগতে পারে তা নিম্নরূপ:
- একটি বৈধ পাসপোর্ট (সর্বনিম্ন ৬ মাস মেয়াদ থাকা লাগবে)
- পাসপোর্ট সাইজের ৪ কপি সদ্য তোলা ছবি
- ইতালি ভিসা
- ট্রাভেল ইন্সুরেন্স
- আর্থিক সাপোর্টের প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
- ট্রাভেল ইতিহাস (বেশ কয়েকটি দেশে ভ্রমণ)
- মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- জাতীয় পরিচয় পত্র
- ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও প্রমাণ (টিকিট বুকিং, হোটেল বুকিং)
- স্কিল সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- ওয়ার্ক এক্সপেরিয়েন্স সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- ইতালি ভাষা সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- ইংরেজি ভাষা দক্ষতা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
- অন্যান্য কাগজপত্র
সৌদি আরব থেকে ইতালি যেতে কত টাকা লাগে
আপনার ভিসার টাইপ এবং মেয়াদের উপর নির্ভর করে সৌদি আরব থেকে ইউরোপে যাওয়ার খরচ ভিন্ন হতে পারে। আপনি যদি সৌদি আরব থেকে ভিজিট ভিসায় ইউরোপে যান, তাহলে কম খরচে যেতে পারবেন। অন্যদিকে, আপনি যদি ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে ইউরোপের দেশ ইতালিতে যান তাহলে আপনার খরচ অনেক বেশি পড়বে।
ইতালি ভিজিট ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে আপনি অবৈধ বিবেচিত হবেন। কিন্তু ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মেয়াদ অনেক দিন থাকবে যার কারণে আপনি ভালো বেতনে ইতালিতে কাজ করতে পারবেন। বর্তমানে সৌদি আরব থেকে ইউরোপের দেশ ইতালিতে যেতে আনুমানিক প্রায় খরচ লাগে ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা। আপনি যদি বৈধভাবে ইউরোপে যান, তাহলে কাজ খুঁজে পেতে আপনার কোন সমস্যা হবে না।
আমার ইটালির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগবে।
এই টপিকে আর্টিকেল আছে পড়ুন। “ইতালি” লিখে সার্চ বক্সে সার্চ করলে সকল কিছু পাবেন।
Italy
আমার ইটালির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগবে।
আর কোথায় কিভাবে আবেদন করবো??
আমার ইটালির ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য কি কি ডকুমেন্ট লাগবে।
আর কোথায় কিভাবে আবেদন করবো??