পশ্চিম এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপের দেশ তুরস্ক শ্রমিকের জন্য নতুন সুযোগের দরজা উন্মোচন করেছে। প্রতি বছরই সরকারিভাবে ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন দেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগ করে থাকে। দেশের কাজের চাহিদার তুলনায় শ্রমিকের সংখ্যা কম থাকায় কোম্পানিগুলো অনলাইনের মাধ্যমে শ্রমিক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছে।
কাজের ভিসায় তুরস্ক যেতে চাইলে আগে অবশ্যই ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক যেতে হলে এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। সরকারিভাবে ভিসা পেলে কম খরচেই তুরস্ক যেতে পারবেন। তবে অনেকেই তুরস্ক কাজের ভিসা করার নিয়ম সম্পর্কে জানেন না। এই আর্টিকেলে আমরা তুরস্ক কাজের ভিসা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছি।
তুরস্ক কাজের ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
তুরস্ক কাজের ভিসা দুই ধরনের। প্রথমটি হলো নিয়মিত কাজের ভিসা এবং অন্যটি হলো সিজনাল শ্রমিক ভিসা। নিয়মিত কাজের ভিসার মেয়াদ হয় এক বছর। সিজনাল শ্রমিক ভিসার মেয়াদ থাকে ছয় মাস। বাংলাদেশ থেকে তুরস্ক কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তবে আপনি নিজে নিজে সরাসরি আবেদন করতে পারবেন। তবে ভুল হলে আবেদন বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তুরস্ক কাজের ভিসা পেতে হলে আপনাকে প্রথমে একটি চাকরির স্পন্সারশিপ পেতে হবে। চাকরির অফার লেটার থাকলে আপনি তুরস্ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ভিসা আবেদন ফরমটি ডাউনলোড করে সঠিকভাবে তা পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ জমা দিতে হবে।
আপনার নিকটতম কোন তুর্কি দূতাবাসে আপনার আবেদন, ভিসা ফি এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিন। এজন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। আপনি ভিসার জন্য যোগ্য হলে আপনাকে জমাকৃত পাসপোর্ট সহ তুরস্ক কাজের ভিসা দেওয়া হবে।
তুরস্ক কাজের ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- পাসপোর্ট
- ছবি
- চাকরির অফার লেটার/স্পন্সরশিপ
- কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ
- ভিসা আবেদন ফরম
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র
- স্বাস্থ্য সনদ
- পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
- অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যদি প্রযোজ্য হয়)
আরও পড়ুন: সরকারিভাবে কানাডা যাওয়ার উপায়
তুরস্ক কাজের বেতন কত
তুরস্কে কাজের সুযোগের খবর শুনে অনেকেই যেতে আগ্রহী হচ্ছেন। কিন্তু তুরস্ক কাজের বেতন কত? এই প্রশ্নটা মনে অবশ্যই আসে। তুরস্কে কাজের বেতন নির্ভর করে কাজের ধরন, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার উপর। বর্তমানে তুরস্কে কাজের সর্বনিম্ন বেতন ৫৬,০০০ টাকা। তবে অভিজ্ঞ কর্মীরা মাসিক ৬০,০০০ টাকা থেকে ৯০,০০০ টাকা পর্যন্ত বেতন পেতে পারেন।
তুরস্কের বেতন বাংলাদেশের তুলনায় খুব বেশি নয়। তবে জীবনযাত্রার খরচ তুলনামূলকভাবে কম। বেতন নির্ধারণে কাজের অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই যত বেশি অভিজ্ঞতা থাকবে তত বেশি বেতন পাবেন। তুরস্কে কাজের বাজার প্রতিযোগিতামূলক। তাই ভালো কাজ পেতে হলে আপনার দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ইউরোপের কোন দেশে বেতন বেশি এবং কোন কাজের চাহিদা বেশি
তুরস্ক কনস্ট্রাকশন কাজের বেতন কত
তুরস্ক কনস্ট্রাকশন কাজের বেতন অন্যান্য কাজের তুলনায় বেশি হওয়ায় অনেকেই এই কাজের প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন। বেশি টাকা উপার্জনের জন্য অনেকেই কনস্ট্রাকশন কাজের ভিসা করে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে তুরস্ক কনস্ট্রাকশন কাজের বেতন কত সে সম্পর্কে অনেকেরই ধারণা নেই।
আপনি যদি নতুন অবস্থায় দেশটিতে কনস্ট্রাকশন ভিসায় যান তাহলে আপনার বেতন হবে ৩৫ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা। আপনার যদি অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে আপনার বেতন হবে ৬০ হাজার টাকা থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। দেশটির কনস্ট্রাকশন সেক্টরে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে। কাজের ধরন অনুযায়ী বেতন ভিন্ন হতে পারে।
আরও পড়ুন: ইউরোপে যাওয়ার সহজ উপায়
তুরস্ক ভিসার দাম কত
বাংলাদেশ থেকে অনেক মানুষ তুরস্কে যাচ্ছে। উচ্চশিক্ষার জন্য তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির আগ্রহ বাড়ছে। অনেকেই আবার কাজের উদ্দেশ্যে তুরস্ক যাচ্ছেন। তবে অনেকেই জানে না তুরস্ক যেতে কত টাকা লাগে।
- তুরস্ক স্টুডেন্ট ভিসা খরচ: ৪ লক্ষ থেকে ৬ লক্ষ টাকা
- তুরস্ক কাজের ভিসা খরচ: ৭ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা
- তুরস্ক টুরিস্ট ভিসা খরচ: ২ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা।
এই খরচের মধ্যে রয়েছে ভিসা ফি, এজেন্সি ফি, টিকিট, ভ্রমণ বীমা, থাকা-খাওয়ার খরচ ইত্যাদি। যদি নিজে ভিসার জন্য আবেদন করেন তবে ভিসা খরচ কম হতে পারে। তবে প্রক্রিয়াটি জটিল হতে পারে এবং ভুল হলে আবেদন বাতিল হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তুরস্ক কাজের ভিসা দাম কত সঠিক তথ্য জানতে দেশটির বাঙালি প্রবাসীদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।
তুরস্কে কোন কাজের চাহিদা বেশি
মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লাখো বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মরত আছেন। রেমিট্যান্স আয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ হলো ইউরোপ-এশিয়ার প্রবেশদ্বার তুরস্ক। তুরস্কে শ্রমবাজার খুবই সংকুচিত হলেও দক্ষ শ্রমিকদের চাহিদা অনেক। তুরস্কে চাহিদা রয়েছে এমন কিছু কাজের তালিকা নিচে দেওয়া হলো:
- কনস্ট্রাকশন
- সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
- সাইবার সিকিউরিটি
- ড্রাইভিং
- হোটেল ও রেস্টুরেন্ট কর্মী
- ক্লিনার
আরও পড়ুন: ইতালিতে বৈধ হওয়ার উপায়
তুরস্ক কাজের ভিসায় যেতে চাই