মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান। বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন উদ্দেশ্যে হাজার হাজার মানুষ স্টুডেন্ট, টুরিস্ট, এবং ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতে পাড়ি জমাচ্ছে। দেশটির সরকার প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে চুক্তির ভিত্তিতে শ্রমিক নিয়োগ দিয়ে থাকে। বর্তমানে যারা দেশটিতে যেতে চাচ্ছেন তাদের অবশ্যই জানতে হবে ওমানের ভিসা কবে খুলবে। পাশাপাশি আপনাকে দেশটির বর্তমান অবস্থা জেনে নিতে হবে।
অনেকে ইন্টারনেটে ওমানে যেতে কত টাকা লাগে লিখে সার্চ করে থাকে। কারণ বেশিরভাগ মানুষ ওমান ভিসার দাম সম্পর্কে তেমন কিছু জানে না। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে আপনি ওমান ভিসার দাম ও বেতন কত বিস্তারিত সবকিছু জানতে পারবেন। পাশাপাশি ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা এবং কাগজপত্র সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
ওমান বেতন কত
ওমানে কাজের ভিসা ভিসা নিয়ে যেতে আগ্রহীদের বেশিরভাগের মনে প্রশ্ন থাকে ওমান বেতন কত হয়। ওমানে কাজের বেতন কত হবে সেটা নির্ভর করবে আপনার কাজ, যোগ্যতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, কোম্পানি এবং ওভারটাইম ইত্যাদি বিষয়ের উপর। নতুন অবস্থায় সাধারণত প্রতিমাসে ২৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা বেতন তোলা যায়। দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতা বাড়লে ৬০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেতন পাওয়া যায়। কোম্পানি ভালো হলে বেশি বেতন পাওয়া যাবে।
ক্রমিক নম্বর | কাজ | বেতন (ওমান রিয়াল) | বেতন (বাংলাদেশি টাকা) |
---|---|---|---|
১ | রাজমিস্ত্রী | ৩০০-৪০০ | ৮৫,৬৪৪-১,১৪,১৯২ |
২ | ইলেকট্রিশিয়ান | ২৮০-৩৬০ | ৭৮,৮৩৬-১,০২,৪৫৬ |
৩ | শেফ | ২০০-২৫০ | ৫৭,০৯৬-৭১,৩৭০ |
৪ | ওয়েটার | ১০০-১৫০ | ২৮,৫৪৮-৪২,৮২২ |
৫ | বাগানের কাজ | ১০০-১২০ | ২৮,৫৪৮-৩৪,২৫৮ |
৬ | সুপার মার্কেট | ১২০-১৫০ | ৩৪,২৫৮-৪২,৮২২ |
৭ | ক্লিনার | ৯০-১২০ | ২৫,২৪৩-৩৪,২৫৮ |
৮ | ড্রাইভিং | ১৫০-২০০ | ৪০,০০০-৬০,০০০ |
ওমানে কোন কাজের চাহিদা বেশি
ওমানে সাধারণত ইলেকট্রনিক্স এবং কনস্ট্রাকশন কাজের চাহিদা বেশি। এসব কাজ করতে পারলে প্রতি মাসে কাজের ভালো বেতন পাবেন। তাছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে। যাওয়ার আগে অবশ্যই যেকোনো একটি কাজের উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে স্কিল অর্জন করবেন। পাশাপাশি অভিজ্ঞতা থাকলে কাজের অভাব হয় না। বর্তমানে ওমানে যেসব কাজের চাহিদা রয়েছে:
- রংমিস্ত্রি
- প্লাম্বার
- মেকানিক
- এসি টেকনিশিয়ান
- ইলেকট্রিশিয়ান
- রাজমিস্ত্রি
ওমান যেতে কত টাকা লাগে
ওমানে মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে নিয়ে যান। উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিসা ক্যাটাগরি এবং ভিসার দাম আলাদা হয়ে থাকে। পরিচিত মানুষের মাধ্যমে যেতে পারেন তাহলে অল্প খরচে কাজের জন্য দেশটিতে যেতে পারবেন। বেসরকারি বিভিন্ন এজেন্সি এবং দালালের শরণাপন্ন হলে ওমান ভিসার দাম বেশি নিবে। সরকারিভাবে ওমান যেতে কম টাকা লাগবে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ওমানে যেতে ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী আনুমানিক প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ টাকা লাগে। তবে মনে রাখবেন স্টুডেন্ট এবং ভিজিট ভিসার দাম কম।
ক্রমিক নম্বর | ভিসা ক্যাটাগরি | ভিসার দাম (টাকা) |
---|---|---|
১ | স্টুডেন্ট ভিসা | ৫০ হাজার-১ লক্ষ |
২ | ওয়ার্ক পারমিট ভিসা | ৩-৫ লক্ষ |
৩ | ভিজিট ভিসা | ৫০-৮০ হাজার |
৪ | ওমান ফ্রি ভিসা | ৩-৩.৫ লক্ষ |
ওমান যেতে কি কি প্রয়োজন
- ভিসা
- পাসপোর্ট
- বিমান টিকিট
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
- জব অফার লেটার
- ভিসা এপ্লিকেশন ফরম
- কাজের দক্ষতার সার্টিফিকেট
- কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ
- মেডিকেল সার্টিফিকেট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
ওমান যেতে কত বছর বয়স লাগে
প্রতিটি দেশের শ্রমিকদের জন্য শ্রম আইন রয়েছে। এই আইন অনুযায়ী কাজের জন্য সর্বনিম্ন বয়স থাকে। ওমানেও এর ব্যতিক্রম নয়। আপনি যদি ওমানে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চান তবে আপনার সর্বনিম্ন বয়স ২২ বছর হতে হবে। তবে স্টুডেন্ট এবং ভিজিট ভিসার ক্ষেত্রে বয়সের কোন সীমা নেই। সম্প্রতি আপডেটে জানা গেছে ওমানে যেতে বর্তমানে সর্বনিম্ন ২১ বছর বয়স লাগে।
আরও পড়ুন: ওমান ভিসা চেক
বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে কত সময় লাগে
বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের দূরত্ব প্রায় ৩,৫২৮ কিলোমিটার। এই দূরত্ব সাধারণত বৈধভাবে গেলে আপনাকে বিমানের মাধ্যমে অতিক্রম করতে হবে। বিমানের ফ্লাইট অনুযায়ী ওমান যাওয়ার সময় কম বেশি হতে পারে। কারণ ননস্টপ ফ্লাইটে যেতে সময় কম লাগে। অন্যদিকে, স্টপ ফ্লাইটে যেতে প্রায় ২ গুণ বেশি সময় লাগে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ওমান যেতে প্রায় ৫ ঘন্টা থেকে ১২ ঘন্টা সময় লাগে।
আরও পড়ুন: ওমান থেকে ইতালি কিভাবে যাওয়া যায়