বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় দেশ যুক্তরাজ্য। কাজ, পড়াশোনা, ভ্রমণ – বহুমুখী উদ্দেশ্যেই লাখ লাখ মানুষ পাড়ি জমান এই দ্বীপরাষ্ট্রে। বাংলাদেশ থেকেও প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে পাড়ি যাচ্ছে। কিন্তু অনেকেই জানেন না, স্বপ্নের এই দেশের ভিসা লাভের সঠিক পথ কী?
এজন্য আপনাকে বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যাওয়ার উপায় জানতে হবে। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো যুক্তরাজ্যের ভিসা লাভের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী।
বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যাওয়ার উপায়
যুক্তরাজ্যের শহর লন্ডনে যাওয়ার বিভিন্ন ধরনের ভিসা ক্যাটাগরী রয়েছে। আপনাকে উদ্দেশ্য অনুযায়ী সঠিক বিষয় ক্যাটাগরি নির্বাচন করে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। লন্ডন ভিসা ক্যাটাগরি গুলো হলো:
- ভিজিটর ভিসা
- স্টুডেন্ট ভিসা
- ওয়ার্ক পারমিট ভিসা
- ইনভেস্টমেন্ট ভিসা
- সেটলমেন্ট ভিসা
উপযুক্ত ভিসা ক্যাটাগরি নির্বাচন করার পর আপনাকে ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে। যুক্তরাজ্য ভিসা আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
- ভিসার আবেদনপত্র
- বৈধ পাসপোর্ট
- বায়োমেট্রিক তথ্য
- ভিসা ফি
- আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
- বাসস্থানের প্রমাণ
- ভ্রমণ বীমা
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
- কাজের অফার লেটার
- মেডিকেল সার্টিফিকেট
- পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
- ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট
ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করার পর আপনাকে অনলাইনে ভিসা আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অনলাইনে জমা দিতে হবে। ভিসা ফি অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে। আপনাকে যুক্তরাজ্যের কোন দূতাবাসে সাক্ষাৎকার দিতে হবে। এজন্য আগে থেকে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হবে। কাজের ভিসা নিয়ে দেশটিতে গেলে লন্ডনে সর্বনিম্ন বেতন কত জেনে যাবেন।
লন্ডন যেতে কত টাকা লাগে
হাজারো বাঙালির মনে লন্ডনের স্বপ্ন। এই লন্ডন যাওয়ার খরচ নির্ভর করে ভিসার ধরনের উপর। টুরিস্ট ভিসা এবং স্টুডেন্ট ভিসার জন্য বর্তমানে অন্যান্য ভিসার তুলনায় কম খরচ হয়। স্টুডেন্ট ভিসা বা টুরিস্ট ভিসার জন্য আপনাকে ৩ লক্ষ থেকে ৪ লক্ষ টাকা খরচ করতে হতে পারে। যারা কাজের ভিসা বা লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে যেতে চান তাদের খরচ হবে বেশি। ৫ লক্ষ থেকে ৮ লক্ষ টাকার মধ্যে খরচ হতে পারে। লন্ডনের ভিসার দাম কত সেটা সাধারণত এজেন্সি ভেদে কম বেশি হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যেতে কত বয়স লাগে
অনেকেই ইন্টারনেটে খোঁজেন, বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যেতে কত বয়স লাগে? এই প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ লন্ডন যাওয়ার জন্য বয়সের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে লন্ডন যাওয়ার ন্যূনতম বয়স ১৯ বছর। এর কম বয়সী ব্যক্তিদের ভিসার জন্য আবেদন করতে দেওয়া হয় না। অন্যদিকে লন্ডনে যাওয়ার সর্বোচ্চ বয়স ৩৫ বছর। ৩৫ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিরাও কাজের ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। তবে টুরিস্ট ও স্টুডেন্ট ভিসার ক্ষেত্রে বয়সের এই শর্ত প্রযোজ্য নয়।
লন্ডন যেতে ielts কত পয়েন্ট লাগে
যুক্তরাজ্য উচ্চশিক্ষার জন্য বিখ্যাত। লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার স্বপ্ন দেখেন অনেক বাঙালি ছাত্র-ছাত্রী। লন্ডনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য আন্তর্জাতিক ইংরেজি ভাষা পরীক্ষা ব্যবস্থা (IELTS) -এ ভালো স্কোর অপরিহার্য। IELTS পরীক্ষায় ৪টি মডিউল থাকে: রিডিং, লিসনিং, স্পিকিং এবং রাইটিং।
প্রয়োজনীয় স্কোর
- স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি: সাধারণত IELTS-এ 6.0 স্কোরের প্রয়োজন হয়।
- স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ভর্তি: IELTS-এ 6.5 থেকে 7.0 স্কোরের প্রয়োজন হয়।
- চিকিৎসা বিষয়ে ভর্তি: IELTS-এ 7.0 স্কোরের প্রয়োজন হয়।
IELTS পরীক্ষায় সকল মডিউলে ৫ এর কম স্কোর গ্রহণযোগ্য নয়। লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পেতে স্কোর ৬ থেকে ৬.৫ এর বেশি লাগে। লন্ডন কাজের ভিসায় যেতে ৬.৫ আইইএলটিএস স্কোর লাগবে। কাজ করতে দেশটিতে গেলে অবশ্যই লন্ডনে কোন কাজের চাহিদা বেশি জেনে রাখবেন।
লন্ডনে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায়
লন্ডন বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় শহর। যেটি ঐতিহাসিক স্থাপত্য, সমৃদ্ধ সংস্কৃতি এবং অসীম সুযোগের দেশ হিসেবে পরিচিত। অনেকেই স্বপ্ন দেখেন লন্ডনে বসবাস করার, কাজ করার এবং একজন ব্রিটিশ নাগরিক হওয়ার। এজন্য আপনাকে জানতে হবে লন্ডনে নাগরিকত্ব পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত।
লন্ডনে নাগরিকত্ব অর্জনের বিভিন্ন উপায় রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো:
- জন্মসূত্রে: যদি আপনার জন্ম একজন ব্রিটিশ নাগরিকের সন্তান হিসেবে হয় তাহলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্রিটিশ নাগরিক হতে পারবেন।
- বসবাসের ভিত্তিতে: যদি আপনি যুক্তরাজ্যে ৫ বছর (স্বামী/স্ত্রীর সাথে থাকলে ২ বছর) স্থায়ীভাবে বসবাস করেন তবে আপনি নাগরিকত্ব আবেদন করার যোগ্য হতে পারেন।
- বিবাহের মাধ্যমে: যদি আপনি একজন ব্রিটিশ নাগরিককে বিয়ে করেন তবে ৩ বছর পর নাগরিকত্ব আবেদন করার যোগ্য হতে পারেন।
- বিনিয়োগের মাধ্যমে: যুক্তরাজ্যে ২ মিলিয়ন পাউন্ড বা তার বেশি বিনিয়োগ করেন তবে ৫ বছর পর নাগরিকত্ব আবেদন করার যোগ্য হতে পারেন।
- বিশেষ যোগ্যতার ভিত্তিতে: যদি আপনার অসাধারণ প্রতিভা, দক্ষতা বা যুক্তরাজ্যে উল্লেখযোগ্য অবদান থাকে তবে আপনি বিশেষ যোগ্যতার ভিত্তিতে নাগরিকত্বের আবেদন করতে পারেন।
London work permit visa