অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া [সর্বশেষ আপডেট]

অস্ট্রেলিয়া ক্যাঙ্গারুর দেশ। এই দেশ উন্নত জীবনযাত্রার মান, মনোরম পরিবেশ, এবং সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। অনেকেই স্বপ্ন দেখেন এই স্বপ্নের দেশে পা রাখার।

এই দেশে পড়াশোনা করার পাশাপাশি পার্টটাইম কাজ করে অনেক বেশি টাকা ইনকাম করা যায়। কারণ এই দেশে কাজে বেতন অনেক বেশি দেওয়া হয় অন্যান্য দেশের তুলনায়। এজন্য স্টুডেন্ট ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা এবং টুরিস্ট ভিসার জন্য এই দেশটি সকলের কাছে পছন্দের গন্তব্য।

আপনার স্বপ্নের দেশ অস্ট্রেলিয়াতে যেতে হলে অবশ্যই অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন এবং ভিসা ক্যাটাগরি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে। নতুবা আপনার স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পারবেন না। তাই এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো অস্ট্রেলিয়া ভিসা ক্যাটাগরি এবং আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত সবকিছু।

অস্ট্রেলিয়া ভিসা ক্যাটাগরি

অস্ট্রেলিয়ায় ভ্রমণ কিংবা স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য ভিসা প্রয়োজন। অস্ট্রেলিয়ান সরকার বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ভিসা প্রদান করে থাকে। অর্থাৎ উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিসা ক্যাটাগরি আলাদা হয়ে থাকে।

টুরিস্ট ভিসা: অল্প সময়ের জন্য ভ্রমণ বা ব্যবসা করার জন্য এই ভিসা। দুই ধরনের টুরিস্ট ভিসা রয়েছে।

  • Electronic Travel Authority (subclass 601): এই ভিসা সাধারণত তিন মাসের জন্য দেওয়া হয়।
  • Visitor Visa (subclass 600): এই ভিসার মেয়াদ সাধারণত ১২ মাস থাকে।

স্টুডেন্ট ভিসা (Subclass 500): এই ভিসা আপনাকে পড়াশোনার করার সুযোগ দিবে। পাশাপাশি পার্টটাইম কাজ করতে পারবেন। তবে অবশ্যই ফুল টাইম কোনো কোর্সে ভর্তি হতে হবে।

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা: অস্ট্রেলিয়া কাজের ভিসা কয়েক ধরনের হয়ে থাকে। যথা:

  • Skilled Independent Visa (Subclass 189): এই ভিসা SOL তে তালিকাভুক্ত পেশায় দক্ষ শ্রমিকদের জন্য।
  • Employer Nomination Scheme (Subclass 186): এই ভিসা দক্ষ শ্রমিকদের অনুমতি দেয় স্থায়ীভাবে বসবাস করার। এজন্য অবশ্যই জব অফার লাগবে।
  • Skilled Nominated Visa (Subclass 190): এই ভিসা প্রদেশ কিংবা অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দিয়ে থাকে।
  • Temporary Skill Shortage Visa (Subclass 482): সাময়িক সময়ের জন্য দক্ষ শ্রমিকের অভাব পূরণের জন্য এই ভিসা দেয়া হয়।
  • Working Holiday Visa (Subclass 417): এই ভিসা স্বল্প সময়ের জন্য কাজ করার এবং পাশাপাশি ছুটি কাটানোর অনুমতি দেয়। এই ভিসা পেতে হলে আপনার বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে। এছাড়া আরও কিছু বিশেষ ধরনের কাজের ভিসা রয়েছে।

অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন ফরম

অস্ট্রেলিয়ার যেকোনো ক্যাটাগরির ভিসার জন্য আবেদন করতে হলে অবশ্যই আবেদন ফরম লাগবে। অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন ফরম ছাড়া অনলাইনে ভিসা আবেদন করা যাবে না। এজন্য আপনাকে অনলাইনে ভিসার জন্য আবেদন করার পূর্বে অবশ্যই অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে এবং সেটি সঠিকভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে।

আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়া যেতে কত বছর বয়স লাগে

অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন করার নিয়ম

সরকারিভাবে অস্ট্রেলিয়ার ভিসার জন্য আবেদন করা যায়। এখন অনলাইনে বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিসা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। যেমন: স্টুডেন্ট ভিসা, কাজের ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ইত্যাদি।

অনলাইনে ভিসা আবেদন করার জন্য আপনাকে নিম্নে উল্লেখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:

  • প্রথমে আপনাকে অস্ট্রেলিয়ার সরকারি ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে হবে। সেখান থেকে আপনাকে অস্ট্রেলিয়া ভিসা প্রসেসিং সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য জেনে নিতে হবে।
  • এরপর আপনাকে উক্ত ইমিগ্রেশন ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে।
  • তারপর আপনার উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিসা ক্যাটাগরি নির্বাচন করতে হবে।
  • আপনার ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে। সাথে অবশ্যই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ এবং ভিসা আবেদন ফি পরিশোধ করতে হবে।
  • আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ভিসা আবেদন ফরম অনলাইনে জমা দিতে হবে। এভাবে আপনি অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন সম্পন্ন করতে পারবেন।

আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়া কাজের বেতন কত

অস্ট্রেলিয়া যেতে কি কি কাগজপত্র লাগে

অস্ট্রেলিয়া ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী যোগ্যতা এবং কাগজপত্র আলাদা লাগে। তবে বেশিরভাগ ভিসার ক্ষেত্রে কাগজপত্র প্রায় একই থাকে। উদ্দেশ্য অনুযায়ী কিছু কাগজপত্র আলাদা হয়ে থাকে। এসব কাগজপত্র ছাড়া অস্ট্রেলিয়া ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন না। অস্ট্রেলিয়া যেতে যেসব যোগ্যতা এবং কাগজপত্র লাগে:

  • ই-পাসপোর্ট
  • পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট
  • মেডিকেল রিপোর্ট সার্টিফিকেট
  • চারিত্রিক সনদ
  • সাম্প্রতিক তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • ইংরেজি ভাষা দক্ষতার সার্টিফিকেট (আইএলটিএস)
  • ভ্রমণ বীমা
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট
  • জাতীয় পরিচয় পত্র
  • আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ট্যাক্স রিটার্ন)
  • স্কিল সার্টিফিকেট
  • কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ
  • অস্ট্রেলিয়ার কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভর্তির লেটার

আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়া যেতে কত টাকা লাগে

5 thoughts on “অস্ট্রেলিয়া ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া [সর্বশেষ আপডেট]”

Leave a Comment