বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়

জার্মানি  অভিবাসন প্রত্যাশীদের কাছে বিশ্বের পঞ্চম জনপ্রিয় ও নিরাপদ দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইউরোপের এই দেশটি শক্তিশালী অর্থনীতি, উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা এবং চাকুরি ও কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ-সুবিধার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের কাছে স্বপ্নের দেশে পরিণত হয়েছে।

অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জার্মানিতে স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায় জানতে হবে। পাশাপাশি আরো জানবেন জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে। তাহলে জার্মানি ভিসা খরচ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।

বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়

ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত এবং সেনজেনভুক্ত উন্নত এই দেশটিতে যেতে তাহলে অবশ্যই একটি বৈধ ভিসার প্রয়োজন। বাংলাদেশ থেকে কয়েক ধরনের ভিসা নিয়ে দেশটিতে যাওয়া যায়। ভিসা ছাড়া দেশটিতে যাওয়ার অন্য কোন উপায় নেই। আমাদের দেশ থেকে সাধারণত দেশটিতে মানুষ স্টুডেন্ট ভিসা, ভিজিট ভিসা এবং কাজের ভিসা নিয়ে যায়।

  • ওয়ার্ক পারমিট ভিসা: জার্মানিতে দক্ষ অভিবাসীর অভাব রয়েছে। আপনি দক্ষ কর্মী হয়ে থাকেন, তবে দেশটির কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে যদি জবের অফার পেয়ে থাকেন তবে এই ভিসা নিয়ে যেতে পারবেন। এই ভিসায় গেলে আপনি কোম্পানিতে কাজ করার অনুমতি পাবেন। এক্ষেত্রে কাজের অফার লেটার গুরুত্বপূর্ণ। দেশটিতে গেলে আপনি ভালো কাজের পাশাপাশি ভালো বেতন পাবেন।
  • স্টুডেন্ট ভিসা ভিসা: জার্মানিতে পড়াশোনা করলে তেমন বেশি খরচ হয় না। কারণ বেশিরভাগ খরচ সরকার প্রদান করে থাকে। জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা পেতে হলে অবশ্যই দেশটির কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি লেটার লাগবে।
  • টুরিস্ট ভিসা: এই ভিসা নিয়ে আপনি পর্যটক হিসেবে জার্মানিতে ভ্রমণ করতে পারবেন। এই ভিসা পেতে প্রায় ১৫ দিন সময় লাগে।

জার্মানি ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া

জার্মানি ভিসা প্রসেসিং করতে হলে আপনাকে প্রথমে ভিসা ক্যাটাগরি সিলেক্ট করতে হবে। এরপর আপনার জন্য উপযুক্ত ভিসা ক্যাটাগরি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে। এরপর আপনাকে সেগুলো জার্মান দূতাবাসে জমা দিতে হবে।

তবে বেশিরভাগ মানুষ ঝামেলার কারণে নিজে নিজে আবেদন না করে অনুমোদিত এজেন্সির মাধ্যমে জার্মানি ভিসা আবেদন করে থাকে। আপনি যদি কম খরচে স্বপ্নের দেশটিতে পাড়ি জামাতে চান তবে আপনাকে নিজে নিজে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারবেন।

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যেতে চাইলে প্রথমে আপনাকে দেশটির বিভিন্ন চাকরির ওয়েবসাইটে গিয়ে চাকরির জন্য আবেদন করতে হবে। কাজের অনুমোদন পেলে আপনাকে ওয়ার্ক পারমিট দেওয়া হবে। তারপর আপনি কাজের অফার লেটার দিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

জার্মানি যেতে কি কি ডকুমেন্টস লাগে

  • আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণপত্র
  • ভর্তি লেটার (স্টুডেন্ট ভিসা)
  • কাজের অফার লেটার (কাজের ভিসা)
  • কাজের প্রশিক্ষণ সনদ
  • আইএলটিএস স্কোর
  • শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ
  • জার্মান ভাষা দক্ষতা
  • কাজের অভিজ্ঞতার প্রমাণ
  • পাসপোর্ট
  • পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • চেয়ারম্যানের সত্যায়িত সনদ
  • ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট
  • মেডিকেল সার্টিফিকেট
  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স

আরও পড়ুন: জার্মানি কাজের ভিসা আবেদন

জার্মানি যেতে কত টাকা লাগে

জার্মানি যাওয়ার খরচ সাধারণত ভিসা ক্যাটাগরির উপর নির্ভর করে থাকে। এজেন্সির মাধ্যমে গেলে খরচ তুলনামূলক অনেক বেশি হয়ে থাকে। তবে নিজে নিজে আবেদন করতে পারলে আপনি কম খরচে যেতে পারবেন। দেশটিতে কাজের ভিসা নিয়ে যেতে বেশি টাকা লাগে। তবে স্টুডেন্ট এবং টুরিস্ট ভিসায় গেলে আপনি কম খরচে যেতে পারবেন।

জার্মানি ভিসা খরচ
ক্রমিক নম্বর ভিসা ক্যাটাগরি ভিসা খরচ (টাকা)
স্টুডেন্ট ভিসা ৫-৬ লক্ষ
ওয়ার্ক পারমিট ভিসা ১২-১৫ লক্ষ
টুরিস্ট ভিসা ৪-৫ লক্ষ

আরও পড়ুন: জার্মানিতে সর্বনিম্ন বেতন কত

বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত সময় লাগে

জার্মানি ভিসা প্রসেসিং করতে আনুমানিক প্রায় দুই থেকে তিন মাস সময় লাগে। বাংলাদেশ থেকে দেশটির দূরত্ব প্রায় ৭,২৮৭ কিলোমিটার। এই দূরত্ব আপনাকে বিমানে করে অতিক্রম করতে হবে। অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যেতে কত সময় লাগে। বাংলাদেশ থেকে বিমানে করে দেশটিতে যেতে প্রায় ১৮ ঘন্টার বেশি সময় লাগে। তবে এই সময় বিমানের ফ্লাইটের উপর নির্ভর করে কম বেশি হতে পারে। কারণ বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের এয়ারলাইন্স রয়েছে।

আরও পড়ুন: জার্মানিতে কোন কাজের চাহিদা বেশি

4 thoughts on “বাংলাদেশ থেকে জার্মানি যাওয়ার উপায়”

Leave a Comment