বর্তমানে সকলের জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে থাকা বাধ্যতামূলক। কারণ পুরাতন হাতে লেখা জন্ম সনদ বর্তমানে কোন কাজে লাগে না। এজন্য আপনাকে সনদটি অনলাইন বা ডিজিটাল করে নিতে হবে।
আপনার জন্ম নিবন্ধনটি অনলাইনে আছে কিনা সেটা জানার জন্য জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই করতে হবে।
পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম
পুরাতন জন্ম সনদ অনলাইন করার জন্য কোন ধরনের কাগজপত্র লাগবে না। এজন্য আপনাকে জন্ম নিবন্ধন প্রতিলিপির জন্য আবেদন করতে হবে।
একাজটি আপনি ঘরে বসে মোবাইল কিংবা কম্পিউটার দিয়ে দুই মিনিটে করতে পারবেন। শুধু ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই যথেষ্ট। তবে উল্লেখ্য, ১৬ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন অবশ্যই প্রথমে ১৭ ডিজিট করে নিতে হবে। এজন্য আপনাকে ১৬ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন ১৭ ডিজিট করার নিয়ম জানতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন ১৭ ডিজিট করা হয়ে গেলে আপনাকে চেক করতে হবে জন্ম নিবন্ধনটি অনলাইনে আছে কিনা। এজন্য আপনি ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন যাচাই করে নিতে পারেন। এর পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন আবেদন করতে হবে।
জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার নিয়ম
হাতে লেখা পুরাতন জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করতে আপনাকে নিম্নে উল্লেখিত ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
ধাপ ১: ওয়েবসাইট ভিজিট
পুরাতন জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল করার জন্য প্রথমে আপনাকে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন bdris নামক সরকারি ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। উক্ত লিংকে প্রবেশ করলে নিচের মতো দেখতে পাবেন।
তারপর আপনাকে ‘মেনু’ অপশন থেকে “জন্ম নিবন্ধন” নামক অপশনে ক্লিক দিতে হবে। জন্ম নিবন্ধন নামক অপশনে ক্লিক দিলে অনেকগুলো অপশন আপনার সামনে হাজির হবে।
সেখান থেকে আপনাকে সিলেক্ট করতে হবে “জন্ম নিবন্ধন সনদ পুনঃ মুদ্রণ” অপশনটি।
ধাপ ২: জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও তারিখ
“জন্ম নিবন্ধন সনদ পুনঃ মুদ্রণ” অপশনটিতে ক্লিক দিলে নিচের মত একটা পেজ আসবে। সেখানে আবেদনকারীর জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও জন্ম তারিখ সঠিকভাবে দিতে হবে।
এরপর একটু নিচে দেখতে পাবেন “অনুসন্ধান” নামক অপশন সেখানে ক্লিক করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন যদি অনলাইনে নিবন্ধন থাকে তাহলে দেখতে পাবেন সেখানে আইডি নম্বর, জন্ম তারিখ, নিবন্ধিত ব্যক্তির নাম, পিতার নাম এবং মাতার নাম।
সকল তথ্য সঠিক থাকলে এবার আপনাকে “নির্বাচন করুন” অপশনটিতে ক্লিক করতে হবে।
নির্বাচন করুন অপশনে ক্লিক করার পর আপনার কাছে একটা পপআপ আসবে। “আপনি কি নিশ্চিত” এরকম একটা লেখা আসলে আপনাকে “কনফার্ম” অপশনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ৩: নিবন্ধন কার্যালয়ের ঠিকানা
এবার নিবন্ধন কার্যালয়ের ঠিকানা দিতে হবে। এই পেজে আপনাকে দেশ, বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং অফিসের তথ্য সঠিকভাবে সিলেক্ট করতে হবে।
ধাপ ৪: আবেদনকারীর তথ্য প্রদান
নিবন্ধন কার্যালয়ের ঠিকানার একটু নিচেই দেখতে পাবেন আবেদনকারী তথ্য প্রদানের অপশন। নিবন্ধিত ব্যক্তির বয়স যদি ১৮ বছরের বেশি হয় তাহলে সম্পর্কের জায়গায় নিজ দিতে হবে।
যদি ১৮ বছরের কম হয় তাহলে সম্পর্কের জায়গায় পিতা দিতে হবে। এজন্য অবশ্যই পিতার কিছু তথ্য দরকার হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ: পিতার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং জন্ম নিবন্ধন নম্বর।
তবে উল্লেখ্য, ২০০১ সালের আগে জন্মগ্রহণ করলে পিতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রয়োজন পড়ে না। আবেদনকারী নিজ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সব তথ্য পূরণ হয়ে যাবে।
এরপর ফোন নম্বরের ঘরে আপনাকে একটি সচল ফোন নম্বর দিতে হবে। ইমেইল দিলেও চলে আবার না দিলেও চলে। এরপর আপনাকে “সাবমিট” অপশনে ক্লিক করতে হবে।
ধাপ ৫: আবেদনপত্র ডাউনলোড
সাবমিট অপশনে ক্লিক করার পর নিজের মতো একটা পেজ আসবে। সেখানে আপনার জন্ম নিবন্ধন আইডি নম্বর দেখতে পাবেন। আর নিচে “আবেদনপত্র প্রিন্ট” নামক অপশন থেকে আবেদন পত্রটি ডাউনলোড করে প্রিন্ট নিতে পারবেন।
আপনাকে একটি নির্দিষ্ট তারিখ বলে দেবে সেই তারিখের মধ্যে নিবন্ধকের কার্যালয়ে আবেদন পত্রটি দাখিল করতে হবে।
আপনি যদি গ্রামের হন তাহলে ইউনিয়ন পরিষদে অথবা পৌরসভার হলে পৌরসভা অফিসে জমা দিতে হবে।
ধাপ ৬: অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ
ইউনিয়ন পরিষদে কিংবা নিবন্ধন অফিসে আবেদনপত্রের সঙ্গে নির্দিষ্ট কিছু ফি জমা দিতে হয়। এরপর আপনাকে তারা সময় দিবে।
উক্ত তারিখের মধ্যে আপনি কাঙ্খিত অনলাইন জন্ম নিবন্ধনটি সংগ্রহ করতে পারবেন। এই পদ্ধতিতে খুব সহজে হাতে লেখা পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করে নিতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে না থাকলে করণীয়
হাতে লেখা পুরাতন জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে না থাকার প্রথম কারণ হলো নিবন্ধনটি ১৩ অথবা ১৬ ডিজিটের হওয়া। এরকম হলে অবশ্যই আপনাকে নিবন্ধনটি ১৭ ডিজিটের করে নিতে হবে। আপনি ২০ সেকেন্ডে একাজটি করতে পারেন।
দ্বিতীয় কারণ হলো নিবন্ধন নম্বরটি ভুল হওয়া। তথ্য ইনপুট করার সময় নিবন্ধন নাম্বার ভুল দিলে কখনো নিবন্ধন অনলাইনে খুঁজে পাবেন না। এজন্য আপনাকে পুনরায় নিবন্ধন নম্বরটি সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে।
তৃতীয় কারণ হলো জন্ম সনদটি অনলাইনে নিবন্ধিত না হয়। আপনার জন্ম সনদ অনলাইনে নিবন্ধিত না হলে অবশ্যই আপনাকে নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে হবে। আপনি অনলাইনে আবেদন সম্পন্ন করে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে পরবর্তীতে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে এজন্য আপনাকে জানতে হবে নতুন জন্ম নিবন্ধন করতে কি কি লাগে এবং জন্ম নিবন্ধন ফি কত।