জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই | জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক [২ মিনিটে]

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই এখন মাত্র দুই মিনিটের কাজ। তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে এখন হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়েই জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করা যায়। জন্ম সনদ একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট। এটি বাংলাদেশের নাগরিকদের প্রথম পরিচয়। নানা প্রয়োজনে এই গুরুত্বপূর্ণ সনদটি কাজে লাগে।

এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই করার পাশাপাশি জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড pdf আকারে করতে পারবেন। সেটা হতে পারে ১৩/১৬/১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর। কিন্তু অবশ্যই সেটি অনলাইনে নিবন্ধিত হতে হবে।

এ কাজটি করার জন্য আপনার কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপের দরকার হবে না। মনে রাখবেন, হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে চেক করা যায় না। এজন্য আপনাকে হাতে লেখা জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার নিয়ম জানতে হবে।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই করতে কি কি লাগে?

অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন চেক করতে ব্যক্তির সঠিক জন্ম তারিখ এবং ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রয়োজন হয়। যাদের জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে নেই তারা নিবন্ধন তথ্য যাচাই করতে পারবেন না। নিবন্ধন নম্বর ১৭ ডিজিটের কম হলেও আপনি যাচাই করতে পারবেন না।

১৭ ডিজিটের কম কিন্তু অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন নিবন্ধন করা আছে তারা চাইলে নিবন্ধন নম্বরটি ১৭ ডিজিট বানাতে পারবেন। এজন্য আপনাকে পুরো আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করার নিয়ম

জন্ম তারিখ এবং ১৭ ডিজিটের নিবন্ধন নম্বর দিয়ে মাত্র কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করে আপনি জন্ম নিবন্ধন যাচাই করতে পারবেন।

ধাপ ১: জন্ম নিবন্ধন যাচাই লিংক ভিজিট

প্রথমে আপনাকে everify.bdris.gov.bd  লিংকে ভিজিট করতে হবে। এটি বাংলাদেশ সরকারের জন্ম এবং মৃত্যু নিবন্ধন অফিসিয়াল ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাদেশের নাগরিকদের নিবন্ধন তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে।

ধাপ ২: ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান

উক্ত লিংকটিতে ভিজিট করার পর তিনটি অপশন দেখতে পাবেন। প্রথম বক্সে বার্থ সার্টিফিকেট নাম্বার প্রদান করতে হবে। সেটা অবশ্যই ১৭ ডিজিটের হতে হবে। সাবধানতার সহিত সঠিকভাবে নিবন্ধন নম্বরটি প্রদান করুন।

ধাপ ৩: জন্ম তারিখ প্রদান

বার্থ সার্টিফিকেট নাম্বার বসানোর পর আপনাকে উক্ত ব্যক্তির সঠিক জন্ম তারিখ বসাতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই একটি ফরমেট অনুসরণ করতে হবে। প্রথমে আপনাকে জন্ম সাল বসাতে হবে ৪ সংখ্যা, তারপরে মাস বসাতে থাকবে ২ সংখ্যার এবং সর্বশেষ তারিখ বা দিন বসাতে। মাস এবং দিন যদি ১০ এর কম হয় তাহলে আগে শুন্য (০) বসাতে হবে। অর্থাৎ আপনাকে YYYY-MM-DD ফরমেট অনুযায়ী জন্ম তারিখ বসাতে হবে।

ধাপ ৪: ক্যাপচা পূরণ

বার্থ সার্টিফিকেট নাম্বার ও ডেট অফ বার্থ বসানোর পর আপনাকে একটি গাণিতিক ক্যাপচা সমাধান করে উত্তরের বক্সে বসাতে হবে। আপনাকে আপনাকে যোগ কিংবা বিয়োগ করতে বলা হবে। আপনি সঠিকভাবে সমাধান করে নিচের বক্সে বসাবেন।

ধাপ ৫: ইনপুটকৃত তথ্য চেকিং

এই ধাপে আপনাকে পুনরায় আরেকবার তথ্যগুলো মিলিয়ে নিতে হবে। আপনি জন্ম নিবন্ধন নম্বর, জন্ম তারিখ এবং ক্যাপচা সমাধান করে সঠিকভাবে বসিয়েছেন। সেগুলো পুনরায় যাচাই করে নিবেন যাতে কোন ধরনের ভুল না থাকে। কারণ ভুল তথ্য ইনপুট করে সার্চ অপশনে ক্লিক দিলে আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনলাইনে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাই উচিত একবার যাচাই করে নেওয়া।

ধাপ: ৬ জন্ম তথ্য যাচাইকরণ

সার্চ অপশনে ক্লিক দিলে নিচের মতো জন্ম সনদের একটি অনলাইন কপি আপনার সামনে হাজির হবে।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই কপিএবার আপনাকে হাতে থাকা জন্ম সনদের সাথে অনলাইন কপি মিলিয়ে দেখতে হবে সবকিছু ঠিক আছে কিনা। যদি অনলাইনে খুঁজে না পাওয়া যায় তাহলে রেকর্ড নট ফাউন্ড লেখা আসবে।

এর মানে হলো আপনার জন্ম নিবন্ধনটি অনলাইনে নিবন্ধিত নেই কিংবা এটা নকল। অনেক সময় ভুল তথ্য ইনপুট করার কারণে এরকমটা হতে পারে। তাই ঘাবড়ে না গিয়ে পুনরায় সঠিকভাবে সকলে তথ্য ইনপুট করে আবার জন্ম নিবন্ধন অনলাইন যাচাই করে দেখতে পারেন।

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড pdf

জন্ম এবং মৃত্যু সনদ ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করে আপনি সরাসরি জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন না। এজন্য আপনাকে নিচে দেখানো পদ্ধতি অবলম্বন করে ডাউনলোড করে নিতে হবে। আপনাকে পদ্ধতিটি ধাপে ধাপে অনুসরণ করার অনুরোধ করছি।

  • প্রথমে আপনাকে উপরে দেখানো ধাপ এক থেকে ছয় পর্যন্ত অনুসরণ করতে হবে। অর্থাৎ আপনার জন্ম নিবন্ধনের অনলাইন কপিটি আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ইনপুট দিয়ে আগে খুঁজে বের করতে হবে।
  • এরপর উক্ত পেজে থাকা অবস্থায় আপনার ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারের কিবোর্ড থেকে আপনাকে CTRL+P প্রেস করতে হবে।
  • CTRL+P প্রেস করলে পিডিএফ তৈরি করার অপশন আসবে। আপনি সঠিক সাইজ দিয়ে পিডিএফ তৈরি করে নিবেন। চাইলে আপনি তৎক্ষণাৎ প্রিন্টার মেশিন দিয়ে প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। আর যদি প্রিন্টার না থাকে তাহলে ডাউনলোড করে সংরক্ষণ করতে পারবেন।

অনলাইনে জন্ম সনদ কেন যাচাই করা প্রয়োজন?

আমরা আগেই জেনেছি, জন্ম নিবন্ধন সরকারি এবং বেসরকারি বিভিন্ন কাজে লাগে। কারণ এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের কাছে। স্কুল-কলেজে ভর্তি থেকে শুরু করে, ভোটার আইডি কার্ড, পাসপোর্ট এবং ভিসা তৈরি করতে জন্ম সনদ আবশ্যিক।

আবার কারো যদি ১৮ বছর হওয়ার পরেও ভোটার আইডি কার্ড না থাকে, তার চাকরির ক্ষেত্রেও জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হয়। এছাড়া আরো বিভিন্ন কাজ রয়েছে সেখানে এই সনদটি লাগে।

তাই একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজের জন্ম নিবন্ধন তথ্য যাচাই করার পাশাপাশি একজন অভিভাবক হিসেবে সন্তানদের জন্ম সনদ অনলাইন চেক করা উচিত।

জন্ম নিবন্ধন যাচাই অনলাইন চেক apps

অনেকেই জন্ম নিবন্ধন যাচাই অনলাইন চেক apps খুঁজছেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্য যে, বর্তমানে এই অ্যাপটি গুগল প্লে স্টোরে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এখন থেকে আপনি অ্যাপ দিয়ে নিবন্ধন তথ্য যাচাই করতে পারবেন না।

বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক যদি কোন অফিসিয়াল অ্যাপ পাবলিশ করা হয় তাহলে বঙ্গ আইটি ব্লগ সেটি আপনাদের আপডেট দিয়ে জানিয়ে দিবে। আপনি চাইলে নিচের বক্সে আপনার ইনফরমেশন দিয়ে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন চেক করতে পারবেন।



তারপর আপনাকে সরকারি অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে সেখানে একটি ক্যাপচা সমাধান করে পূরণ করলেই কাজ শেষ।

Leave a Comment