জন্ম নিবন্ধন ভেরিফিকেশন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জন্ম নিবন্ধন একজন ব্যক্তির বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রমাণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি বিভিন্ন সরকারি সুবিধা ও সেবা গ্রহণের জন্য প্রয়োজন পড়ে। জন্ম নিবন্ধন ভেরিফিকেশন করে জন্ম সনদ তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত করা যায়।
ভুল তথ্যের কারণে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া ভেরিফিকেশন করে জালিয়াতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। ভুল বা জাল জন্ম নিবন্ধনের ব্যবহার আইনি জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই জন্ম নিবন্ধন ভেরিফিকেশন করে এই আইনি জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
জন্ম নিবন্ধন একজন ব্যক্তির পরিচয় প্রমাণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যক্তির পরিচয় যাচাই করার জন্য ব্যবহার করা হয়। সুতরাং, সকলের উচিত সনদ ভেরিফিকেশন করে নেওয়া।
জন্ম নিবন্ধন ভেরিফিকেশন করতে কি কি লাগে?
জন্ম নিবন্ধন ভেরিফিকেশন করার জন্য কোনো প্রকার ফি প্রদান করতে হয় না। অনলাইনে ভেরিফিকেশন করার সময় সঠিক তথ্য প্রদান করতে হবে। এখন ঘরে বসে খুব সহজে অনলাইনে মোবাইল কিংবা কম্পিউটার দিয়ে এ কাজটি করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে পুরো আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে। বাংলাদেশ সরকারের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ওয়েবসাইট ব্যবহার করে একাজটা করতে পারবেন।
জন্ম নিবন্ধন ভেরিফিকেশন করতে আপনার নিম্নলিখিত জিনিসগুলোর প্রয়োজন হবে:
- ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর
- YYYY-MM-DD ফরমেটে আপনার সঠিক জন্ম তারিখ
- ইন্টারনেট সংযোগ
- স্মার্টফোন কিংবা কম্পিউটার
অফলাইনে ভেরিফিকেশন করার সময় আপনার জন্ম নিবন্ধনের আবেদনপত্রের সত্যায়িত কপি সাথে রাখুন।
জন্ম নিবন্ধন ভেরিফিকেশন করার নিয়ম
অনলাইন এবং অফলাইন এই দুটি উপায়ে জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে ভেরিফিকেশন করা যায়। অনলাইনে জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর ও জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে খুব সহজে এই কাজটি করতে পারবেন। অফলাইনে করতে হলে অবশ্যই নিকটস্থ জন্ম নিবন্ধন অফিস বা ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করতে হবে। অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন নম্বর দিয়ে মাত্র তিনটি ধাপ অনুসরণ করে যে কারো জন্ম নিবন্ধন ভেরিফিকেশন করে নিতে পারেন।
প্রথম ধাপ: জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান করুন
প্রথমে বাংলাদেশ সরকারের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন ওয়েবসাইট ভিজিট করতে হবে। everify.bdris.gov.bd এই লিংকে ভিজিট করলে নিচের মত পেজ আসবে। প্রথম বক্সে আপনাকে ১৭ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর ইনপুট করতে হবে।
আপনার নিবন্ধন নম্বরটি যদি ১৭ ডিজিটের না হয় তাহলে অবশ্যই সেটি ১৭ ডিজিট করে নিতে হবে। নতুবা আপনি জন্ম নিবন্ধন ভেরিফিকেশন করতে পারবেন না। ১৩ বা ১৬ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন ১৭ ডিজিট করার উপায় সম্পর্কে শেষে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
দ্বিতীয় ধাপ: সঠিক জন্ম তারিখ প্রদান করুন
জন্ম নিবন্ধন নম্বরটি সঠিকভাবে বসানোর পর আপনাকে সঠিকভাবে জন্ম তারিখ বসাতে হবে। জন্ম তারিখ বসানোর ফরম্যাট সঠিকভাবে অনুসরণ করতে হবে। প্রথমে সাল, মাস এবং দিন এভাবে বসাতে হয়। অর্থাৎ আপনাকে YY-MM-DD এই ফরমেট অনুযায়ী বসাতে হবে।
তৃতীয় ধাপ: সঠিকভাবে ক্যাপচা পূরণ করুন
জন্ম সনদ নম্বর এবং জন্ম তারিখ সঠিকভাবে ফরমেট অনুযায়ী বসানোর পর আপনাকে একটি গাণিতিক ক্যাপচা পূরণ করতে হবে। এই ক্যাপচাটি গাণিতিক হিসাব নিকাশের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। গাণিতিক এই ক্যাপচাটি যোগ ও বিয়োগের মাধ্যমে মাধ্যমে সমাধান করতে হয়।
যোগ কিংবা বিয়োগ করে সঠিক ফলাফলটি উত্তরের জায়গায় বসান। সবকিছু সঠিকভাবে বসানো হয়ে গেলে সর্বশেষ আপনাকে সার্চ অপশনে ক্লিক করতে হবে। এই অপশনে ক্লিক দিলে নিচের মত জন্ম নিবন্ধন অনলাইন তথ্য দেখতে পাবেন। চাইলে এই পেজটি আপনি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। এভাবে জন্ম নিবন্ধন ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হবে।
জন্ম নিবন্ধন ১৭ ডিজিট করার নিয়ম
১৬ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন খুব সহজে ১৭ ডিজিট বানিয়ে নেওয়া যায়। প্রথমে আপনার হাতে থাকা জন্ম নিবন্ধনের নম্বরটি প্রথমে সংগ্রহ করুন। এরপর শেষের দিক থেকে ৫ ডিজিট পূর্বে একটি ০ (শুন্য) বসিয়ে দিতে হবে। তাহলে আপনার জন্ম নিবন্ধন ১৭ টিজিটের হয়ে যাবে।
আর যদি ১৩ ডিজিটের জন্ম নিবন্ধন নম্বর হয়, তাহলে খুব সহজে সেটি ১৭ ডিজিট বানিয়ে নিতে পারবেন। এজন্য জন্ম সনদ নম্বরের প্রথমে জন্ম সাল বসিয়ে দিতে হবে। চার সংখ্যার জন্ম সাল প্রথমে বসিয়ে দিন তাহলেই জন্ম নিবন্ধন নম্বরটি ১৭ ডিজিটের হবে।
এরপরেও জন্ম নিবন্ধন অনলাইনে পাওয়া না গেলে আপনার সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ বা পৌরসভা কার্যালয়ে যোগাযোগ করে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করুন। এক্ষেত্রে আপনি নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন জন্ম নিবন্ধন ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়াটি। কোন জিজ্ঞাসা থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন।
19988515854400134